ছোট্ট বাচ্চাটি হাসপাতালের ট্রলিতে শোয়া। বয়স চার বছরের মতো। ঢাকার আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় ‘আত্মঘাতী’ বোমার স্প্লিন্টার তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঢুকে গেছে। রক্তক্ষরন অনেক হয়েছে। মাথা, হাত ও পেটসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ। নির্লিপ্ত চাহনিতে খুঁজছে বাবা-মা অথবা কোনো স্বজনকে। কিন্তু নেই পরিচিত একজনও। তাকে ঘিরে হট্টগোল। বন্দুকধারী পুলিশ, চিকিৎসক আর সাংবাদিকদের ভিড়।
From The Web আমরা মানুষের সেবায় নিয়যিত
@akazadbd24///শনিবার বেলা ২টার দিকে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। তখনই এ রকম একটা পরিস্থিতি তৈরি হয় তাকে ঘিরে। হাসপাতালে রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যালের অপারেশন থিয়েটারে শিশুটির শরীরে অস্ত্রপচার চলছিলো। জানা গেছে, শিশুটির সারা শরীরে স্প্লিন্টারের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শিশু কন্যাটির অবস্থা সংকটাপন্ন।
বিস্ফোরণে আহত হওয়ার পর শিশুটিকে প্রথমে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। পরে শিশুটিকে নাকে অক্সিজেনের নল লাগানো অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ব্লকে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা বলেন, শিশুটির হাত, পেট ও পায়ে ব্যান্ডেজ লাগানো ছিল। চিকিৎসকেরা অক্সিজেন মাস্ক খোলার পর সে তার নাম বলে সাবিনা, বাবা ইকবাল আর মা শাকিরা বলেও জানায় সে। এরপর তাকে অস্ত্রোপচারকক্ষে নেওয়া হয়।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বেঁধে দেওয়া সময়ের দুই মিনিট আগে দরজা খুলে ওই নারী বেরিয়ে এলেন। আমি মনে মনে খুব খুশি হলাম, রক্তপাতহীনভাবে সবাই আত্মসমর্পণ করছে ভেবে। শিশুটিকে এক হাতে ধরে ওই নারী কেমন যেন রোবটের মতো হাঁটছিলেন। আমি কয়েকবার বললাম যেখানে আছেন সেখানে দাঁড়ান, দুই হাত ওপরে তুলুন। প্লিজ থামুন। কিন্তু ওই নারী এগিয়েই আসছিলেন। দেখি তাঁর পেটের দিকের বোরকা ফোলা। আমি কিছু একটা আঁচ করে নিজের মাথাটা বাঁচিয়ে দিলাম দৌড়।
কাছাকাছিই ছিলেন ডিসি মহিবুল স্যার, আর ইন্সপেক্টর শফি। আমি দৌড় দেওয়ার দুই সেকেন্ডের মধ্যে বিস্ফোরণ। কিছুক্ষণ পরে দেখি রক্তাক্ত মুখে ইন্সপেক্টর শফি হেঁটে আসছেন। তখনই বাচ্চাটার কথা মনে পড়ে গেল। উঁকি মেরে দেখি শিশুটা নড়ছে। ঝুঁকি নিয়ে তাকে উদ্ধার করা হলো।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার আগে শিশুটিকে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিশুটিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এখানে পাঠানো হয় বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক শহীদুল গণি।
অবুঝ শিশুটির বিশ্বাস ছিলো তার মায়ের কনো
ক্ষতি হবেনা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন