স্টাফ- সৈয়দপুরে বন্ধুত্বের মধুর সম্পর্ক এখন চরম শত্রুতায় রুপান্তরিত হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের চিকলী নিজবাড়ী মাদ্রাসাপাড়ার মঈনুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা বেগম (২৮)। এই দম্পতির ৩টি সন্তান রয়েছে। মঈনুল ইসলামের বন্ধু একই ইউনিয়নের পার্শবর্তী হাজির বটতলা গ্রামের দেলোয়ার হোসেন জিকুর ছেলে প্রাইভেট কারের ড্রাইভার আঃ রশিদ (৩৫)। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্কের সুবাদে একে অপরের বাসায় যাতায়াত ছিল উভয়েরই। এই যাতায়াতকে পুঁজি করে বন্ধুর সুন্দরী স্ত্রীর উপর লোলুপ দৃষ্টি দেয় রশিদ। এক পর্যায়ে তা গড়ায় প্রণয়ে।
গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধায় সেই প্রণয়ের টানে নিজ স্বামী, সন্তান, সংসার রেখে রশীদের বাড়িতে গিয়ে ওঠে নাসিমা বেগম। এর আগে চলতি মাসের গত ২২ ডিসেম্বর বন্ধুর সাথে নিজ স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে নাসিমার সাথে মঈনুলের ঝগড়া হয়। তারপর ২৪ তারিখ সকালে স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে নিজের তিন সন্তানকে নিয়ে রাবেয়া মোড় সংলগ্ন চাকলায় বোনের বাড়ীতে বেড়াতে যান তিনি। ওইদিনই সন্ধায় মঈনুলের প্রতিবেশী তাকে ফোন করে জানায় যে তোমার বউ বাসায় নাই। এরপর মঈনুল তড়িঘড়ি করে বাসায় ফেরত এসে চারিদিকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে মঈনুল ধারণা করে যে তার স্ত্রী রশিদের বাড়িতে যেতে পারে। পরে ওইদিন রাতেই রশিদের বাড়িতে মঈনুলের বোন ও বোনজামাই গিয়ে নাসিমাকে দেখে অবাক হয়। নাসিমা মঈনুলের বাড়ি থেকে রশিদের বাড়ি যাবার সময় নগদ ৬০ হাজার টাকা ও সোনার গহনা সাথে নিয়েছিল। মঈনুলের বোন নাসিমাকে বাসায় ফেরত আসতে বললে সে বাসায় না এসে তার সাথে থাকা ৬০ হাজার টাকা ফেরত দেয়। নাসিমাকে ফেরত আনতে ব্যর্থ হয়ে মঈনুলের বোন টাকা নিয়ে বাসায় ফিরে আসে। এরপর থেকে ২৮ ডিসেম্বর দুপুর ৩ টা পর্যন্ত রশিদের বাসায় থাকে নাসিমা। অথচ রশিদেরও স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে।
নিজ স্ত্রীকে ফেরত ও রশিদের শাস্তির জন্য ২৮ ডিসেম্বর সকালে কামারপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেন মঈনুল। এরপর চেয়ারম্যানের উদ্যোগে গ্রাম আদালতে বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় মঈনুল সৈয়দপুর থানায় একটি অভিযোগ দেন।
এ ব্যাপারে মঈনুল জানান, যখন আমার স্ত্রীর সাথে রশিদের সম্পর্কের বিষয়টি বুঝতে পারি তখন আমি রশিদকে আমার বাড়িতে আসতে নিষেধ করে দেই। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা সত্বেও সে মাঝে মাঝে আমার অনুপস্থিতিতে আমার বউয়ের সাথে দেখা করে। রশিদকে সহায়তা করে আমার বাড়ির পেছনের এক লোক তাদের দেখা করার ব্যবস্থা করে দিত। তিনি বলেন, আমার সহজ-সরল স্ত্রীকে বিপথে নিয়ে গিয়ে আমার সোনার সংসার নষ্ট করার জন্য আমি রশিদের শাস্তি চাই।
এদিকে বন্ধুর স্ত্রীর সরলতার সুযোগ নিয়ে তাকে ফাঁদে ফেলে তার সংসার নষ্ট করার অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চাইলে ঘটনার মূল হোতা রশিদের সাথে বাসায় কথা বলতে গেলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এরপর তার ব্যবহৃত মোবাইল (01740187415) নাম্বারে ফোন দিয়ে কথা বললে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তৎক্ষণাৎ লাইন কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে রাখে। পরে একাধিক নাম্বার দিয়ে কল করা হলেও সে ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
কামারপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমান বলেন, গ্রাম আদালতের ১ম বৈঠকে বিষয়টির সমাধান হয়নি। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আগামী ৪ জানুয়ারী (বুধবার) বসা হবে। আশা করছি বিষয়টির সমাধান হবে।
সৈয়দপুর থানার ওসি আমীরুল ইসলাম আজাদবিডি২৪কে জানান, মঈনুলের স্ত্রী বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে উঠেছে এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনী পদক্ষেপ চলমান রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন